• মার্চ ১৯, ২০২৪, ১২:৫২ পিএম
  • EN


মানবিক সহায়তা কর্মসূচি: ভিজিএফ এবং জিআর
 
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় দুর্যোগকালিন ও দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে এবং কৃষি ক্ষেত্রে কর্মহীন সময়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মাধ্যমে দেশব্যাপী মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে থাকে। এই মানবিক সহায়তা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:

(১) দুঃস্থদের খাদ্য সহায়তা (ভিজিএফ)

(২) খাদ্য ও অর্থ সহায়তা (জিআর)

 দুঃস্থদের খাদ্য সহায়তা (ভিজিএফ)

ভিজিএফ একটি মানবিক সহায়তা কর্মসূচি, যার মাধ্যমে সরকার দরিদ্র পরিবারের মধ্যে খাদ্য বিতরণ করে থাকে। ভিজিএফ কর্মসূচিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের মধ্যে খাদ্যশস্য সরবরাহ করা হয়। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হচ্ছে দরিদ্র পরিবারের দারিদ্র্য হ্রাস করা : (১) দুঃস্থ ও গরীর জনগণের দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমন করার লক্ষ্যে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; (২) পীড়িত জনগণ এবং শিশুদের রোগ প্রতিরোধ করা; (৩) মন্দার সময়ে কর্মহীন জনগণের মধ্যে খাদ্য সরবরাহ করা; (৪) উপকারভোগীদেরকে সাময়িক সাহায্যের মাধ্যমে দারিদ্র্য নিরসনে অবদান রাখা, বিশেষ করে অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহায়তা করা।

এই কর্মসূচির উপকারভোগী হচ্ছে: (১) যার বসতভিটা ব্যতীত অন্য কোন জমি নাই এরূপ ভূমিহীন ব্যক্তি; (২)দরিদ্র ও অতিদরিদ্র ব্যক্তি/পরিবার, যারা সাধারণত: দৈনিক ২ বেলা খাবারের ব্যবস্থা করতে পারে না; (৩)প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি/পরিবার, যারা তীব্র খাদ্য ও অর্থ সংকটাপন্ন; (৪) ব্যক্তি/পরিবার যারা বেকারত্বের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করতে পারে না; (৫) অতি দরিদ্র ব্যক্তি/পরিবার, যারা বিশেষ পেশায় নিয়োজিত এবং যাদেরকে জনস্বার্থে তাদের পেশা থেকে নিবৃত রাখা প্রয়োজন হয়; (৬) প্রাথমিক বিদ্যালয়গামী শিশু, যারা অপুষ্টিতে ভুগছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় হতে ২ কিস্তিতে খাদ্যশস্য বার্ষিক বরাদ্দ পেয়ে থাকে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর আবার এ খাদ্যশস্য যোগ্য উপকারভোগীদের মধ্যে বিতরনের জন্য নির্দিষ্ট উপজেলার জনসংখ্যা এবং দারিদ্রসীমা বিবেচনা করে জেলা প্রশাসকের অনুকূলে উপজেলা ভিত্তিক উপ-বরাদ্দ প্রদান করেন।

 খাদ্য ও অর্থ সহায়তা (জিআর)
জিআর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের একটি মানবিক সহায়তা কমসূচি, যাতে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে জরুরি সাহায্য হিসেবে খাদ্যশস্য/নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়। জিআর কর্মসূচির উদ্দেশ্য হচ্ছে: (১) বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ও অভাবগ্রস্ত ব্যক্তি/পরিবারকে তাৎক্ষণিক খাদ্য/অর্থ সহায়তা প্রদান করা; (২) দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির চিকিৎসা/নিহত ব্যক্তি/পরিবার অথবা প্রাকৃতিক/মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় ব্যক্তি/পরিবারকে বিশেষ বিবেচনায় খাদ্য/অর্থ সহায়তা প্রদান করা; (৩) সরকারি/বেসরকারি এতিমখানা, লিল্লাহ-বোডিং, শিশুসদন, মূসাফির/লঙ্গরখানা,ধর্মীয় উৎসবে উপস্থিত জনগণকে খাদ্য ও অর্থ সহায়তা প্রদান করা; (৪) প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল/ কলেজ/ মাদ্রাসা/ এতিমখানা/ মসজিদ/ মন্দির/ গীর্জা/ প্রাগোডা/কিয়াং/পাঠাগার/অন্যান্য নিবন্ধিত সামাজিক প্রতিষ্ঠান পুনঃনির্মাণ ও সংস্কারের জন্য ঢেউটিন ও অর্থ সাহায্য প্রদান করা।

কালবৈশাখী, ঘূর্ণিঝড়, অগ্নিকান্ড, ভূমিকম্প, ভূমিধ্বস, নদীভাঙ্গন ইত্যাদি বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে জরুরি সহায়তা প্রদানের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় হতে বার্ষিক খাদ্যশস্য এবং নগদ অর্থ বরাদ্দ পেয়ে থাকে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর আবার যোগ্য উপকারভোগীদের মধ্যে জরুরি সহায়তা হিসেবে বিতরণের জন্য বিভিন্ন জেলা প্রশাসকের অনুকূলে উপজেলা ভিত্তিক খাদ্যশস্য/অর্থ উপ-বরাদ্দ প্রদান করে।